জুয়েল উপন্যাস শুরু করেছেন এইভাবে- ‘মেয়েটি থ্রিপিস খুলছে। আড়ালে—আবডালে নয়, খুলছে একপাল যুবক—যুবতীর সামনে।’ এই সাহসী বর্ণনার হাত ধরেই উপন্যাস এগোতে থাকে। প্রাপ্তমনস্কদের উপযুক্ত এই উপন্যাস চিত্রকলা, নন্দনতত্ত্ব, যৌনতা, নারী শরীর, শ্রেণি চেতনা, সমাজবাস্তবতা ইত্যকার বিষয়কে তুলে ধরে সাবলীল বয়ানে। সাবলীল ও সাহসীÑ জুয়েল কবিরের উপন্যাস সম্পর্কে এটুকু বলা যায় অনায়াসেই।
এ উপন্যাসে প্রফেসর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘গায়ে কাপড় না থাকলে একজন নারী বা পুরুষ যে লজ্জার দ্বারা আক্রান্ত হয়, ন্যুড আসলে তা নয়। ন্যুডে থাকবে না কোনো অভাবের কথা, ন্যুড আসলে কোনো অপ্রস্তুতকর অবস্থারও রূপায়ণ নয়। ন্যুডের মোদ্দাকথা হচ্ছে— সম্পূর্ণ এবং পূর্ণাঙ্গতা। অপূর্ণাঙ্গ কোনো নারী বা পুরুষ ন্যুড মডেলও হতে পারে না। করুণা জাগ্রত হলেই ন্যুড পেইন্টিংয়ের ব্যর্থতা। এ এক সুষম, সমৃদ্ধ এবং পূর্ণাঙ্গ শরীর। শিল্পীর সুষ্ঠু দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা এবং রংতুলিতে রেখায় যা প্রকাশ করবে অদ্ভুত দ্যোতনা।’ শিল্পচর্চার এই দ্যোতনার কথা পাই জুয়েলের উপন্যাসে।
জুয়েল কবিরের ‘মেয়েটি সাঁওতাল নয়’ উপন্যাস চলতি বাংলা উপন্যাসের ধারা থেকে একটু ভিন্ন। বলার ভঙ্গিতে নয়, বরং বিষয়ের কারণেই সে সাহসী। একজন চিত্রশিল্পী আদনান শামস এবং একজন ন্যুড মডেল বাতাসীকে ঘিরে বিস্তৃত হয়েছে এ উপন্যাসের কাহিনি।
জুয়েল উপন্যাস শুরু করেছেন এইভাবে- ‘মেয়েটি থ্রিপিস খুলছে। আড়ালে—আবডালে নয়, খুলছে একপাল যুবক—যুবতীর সামনে।’ এই সাহসী বর্ণনার হাত ধরেই উপন্যাস এগোতে থাকে। প্রাপ্তমনস্কদের উপযুক্ত এই উপন্যাস চিত্রকলা, নন্দনতত্ত্ব, যৌনতা, নারী শরীর, শ্রেণি চেতনা, সমাজবাস্তবতা ইত্যকার বিষয়কে তুলে ধরে সাবলীল বয়ানে। সাবলীল ও সাহসীÑ জুয়েল কবিরের উপন্যাস সম্পর্কে এটুকু বলা যায় অনায়াসেই।
এ উপন্যাসে প্রফেসর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘গায়ে কাপড় না থাকলে একজন নারী বা পুরুষ যে লজ্জার দ্বারা আক্রান্ত হয়, ন্যুড আসলে তা নয়। ন্যুডে থাকবে না কোনো অভাবের কথা, ন্যুড আসলে কোনো অপ্রস্তুতকর অবস্থারও রূপায়ণ নয়। ন্যুডের মোদ্দাকথা হচ্ছে— সম্পূর্ণ এবং পূর্ণাঙ্গতা। অপূর্ণাঙ্গ কোনো নারী বা পুরুষ ন্যুড মডেলও হতে পারে না। করুণা জাগ্রত হলেই ন্যুড পেইন্টিংয়ের ব্যর্থতা। এ এক সুষম, সমৃদ্ধ এবং পূর্ণাঙ্গ শরীর। শিল্পীর সুষ্ঠু দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা এবং রংতুলিতে রেখায় যা প্রকাশ করবে অদ্ভুত দ্যোতনা।’ শিল্পচর্চার এই দ্যোতনার কথা পাই জুয়েলের উপন্যাসে।
কখনোবা তীব্র নাটকীয়তা ছড়িয়ে পড়ে তার উপন্যাসে। পাঠকের মধ্যে প্রবল কৌতূহল আর উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারেন জুয়েল কবির। ‘কাইল রাইতে ফাঁসি নিতে গেছিলাম গাছের ডাইলে। ডাইল ভাইঙ্গা পইরা গেছি। কাজের কাজ কিছু হয় নাই, মধ্যে থাইক্কা কোমরে ব্যথা পাইছি। গলাতেও দাগ হইছে। এখন সবাই খালি এই দাগ নিয়া প্রশ্ন করতাছে।’Ñ বাতাসীর এই সংলাপের পর পাঠক উন্মুখ হয় ঘটনার পরবর্তী মোচড় দেখার অপেক্ষায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে অতি নাটকীয়তা এই উপন্যাসের নান্দনিক পরিপ্রেক্ষিতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গল্প বয়ানে মনোযোগ থাকা ভালো, আধুনিক উপন্যাসে গল্পহীনতার একটা চর্চা তো চলছেই। তবে চিত্রকলা, ন্যুড পেইন্টিংয়ের নন্দনতাত্ত্বিক একটা মজবুত পাটাতন তৈরি করার সুযোগ এ উপন্যাসে ছিল। এ প্রসঙ্গে ক্ষুধা রয়ে গেল।
জুয়েলের ভাষাভঙ্গি, চরিত্র সৃষ্টি যথেষ্ট সরস। উপন্যাসের একপর্যায়ে চারুকলার পেশাদার মডেল বাতাসীর সঙ্গে এক রিকশায় দেখা যায় আদনানকে, সেই নিয়ে বন্ধু রবি ঘোষ গান শোনায়Ñ
‘আরে... শোনো শোনো শোনো সবাই শোনো দিয়া মন,
আদনান বাতাসী করে রিক্সাতে ভ্রমণ।
পাশাপাশি বসে দু’জন ঠাসাঠাসি কইরা,
এই ঘটনা দেইখা আমি লজ্জাতে যাই মইরা।
আবার আমায় কইলো শালায় যাইবো নাকি বাসায়,
ঘরেতে কী করবো দুইজন যায় না বলা ভাষায়।’
রবি ঘোষ নামকরণটিও যথেষ্ট সরস ইঙ্গিত দেয়। এই গানের মধ্যে শুধু রবি ঘোষ নয়, আমাদের পরচর্চাপরায়ণ মনের খবরটিও নিহিত।
শুধু গান নয়, জুয়েল কবিরের উপন্যাসে আমরা কবিতাও পাই। আদনান যৌবনে কবিতা লিখেছিলেনÑ
ব্রহ্মপুত্রের জল পবিত্র
কারণ এ জল কারো শত্রু নয়
সকলের মিত্র।
পবিত্র ব্রহ্মপুত্রের জল
কারণ এতে স্নান করে
পতিতার দল।
গান, কবিতা, চিত্রকলা, ভাস্কর্য, শিল্পী, মডেল ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ টেনে এনেছে জুয়েল কবির। আপাত আকারে ছোট এই উপন্যাসের অন্দরে ঠাস বুননের মতো রয়ে গেছে বিবিধ ঐশ্বর্য।
জুয়েল উপন্যাস শুরু করেছেন এইভাবে- ‘মেয়েটি থ্রিপিস খুলছে। আড়ালে—আবডালে নয়, খুলছে একপাল যুবক—যুবতীর সামনে।’ এই সাহসী বর্ণনার হাত ধরেই উপন্যাস এগোতে থাকে। প্রাপ্তমনস্কদের উপযুক্ত এই উপন্যাস চিত্রকলা, নন্দনতত্ত্ব, যৌনতা, নারী শরীর, শ্রেণি চেতনা, সমাজবাস্তবতা ইত্যকার বিষয়কে তুলে ধরে সাবলীল বয়ানে। সাবলীল ও সাহসীÑ জুয়েল কবিরের উপন্যাস সম্পর্কে এটুকু বলা যায় অনায়াসেই।
এ উপন্যাসে প্রফেসর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘গায়ে কাপড় না থাকলে একজন নারী বা পুরুষ যে লজ্জার দ্বারা আক্রান্ত হয়, ন্যুড আসলে তা নয়। ন্যুডে থাকবে না কোনো অভাবের কথা, ন্যুড আসলে কোনো অপ্রস্তুতকর অবস্থারও রূপায়ণ নয়। ন্যুডের মোদ্দাকথা হচ্ছে— সম্পূর্ণ এবং পূর্ণাঙ্গতা। অপূর্ণাঙ্গ কোনো নারী বা পুরুষ ন্যুড মডেলও হতে পারে না। করুণা জাগ্রত হলেই ন্যুড পেইন্টিংয়ের ব্যর্থতা। এ এক সুষম, সমৃদ্ধ এবং পূর্ণাঙ্গ শরীর। শিল্পীর সুষ্ঠু দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা এবং রংতুলিতে রেখায় যা প্রকাশ করবে অদ্ভুত দ্যোতনা।’ শিল্পচর্চার এই দ্যোতনার কথা পাই জুয়েলের উপন্যাসে।
By জুয়েল কবির
Category: উপন্যাস
জুয়েল কবিরের ‘মেয়েটি সাঁওতাল নয়’ উপন্যাস চলতি বাংলা উপন্যাসের ধারা থেকে একটু ভিন্ন। বলার ভঙ্গিতে নয়, বরং বিষয়ের কারণেই সে সাহসী। একজন চিত্রশিল্পী আদনান শামস এবং একজন ন্যুড মডেল বাতাসীকে ঘিরে বিস্তৃত হয়েছে এ উপন্যাসের কাহিনি।
জুয়েল উপন্যাস শুরু করেছেন এইভাবে- ‘মেয়েটি থ্রিপিস খুলছে। আড়ালে—আবডালে নয়, খুলছে একপাল যুবক—যুবতীর সামনে।’ এই সাহসী বর্ণনার হাত ধরেই উপন্যাস এগোতে থাকে। প্রাপ্তমনস্কদের উপযুক্ত এই উপন্যাস চিত্রকলা, নন্দনতত্ত্ব, যৌনতা, নারী শরীর, শ্রেণি চেতনা, সমাজবাস্তবতা ইত্যকার বিষয়কে তুলে ধরে সাবলীল বয়ানে। সাবলীল ও সাহসীÑ জুয়েল কবিরের উপন্যাস সম্পর্কে এটুকু বলা যায় অনায়াসেই।
এ উপন্যাসে প্রফেসর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘গায়ে কাপড় না থাকলে একজন নারী বা পুরুষ যে লজ্জার দ্বারা আক্রান্ত হয়, ন্যুড আসলে তা নয়। ন্যুডে থাকবে না কোনো অভাবের কথা, ন্যুড আসলে কোনো অপ্রস্তুতকর অবস্থারও রূপায়ণ নয়। ন্যুডের মোদ্দাকথা হচ্ছে— সম্পূর্ণ এবং পূর্ণাঙ্গতা। অপূর্ণাঙ্গ কোনো নারী বা পুরুষ ন্যুড মডেলও হতে পারে না। করুণা জাগ্রত হলেই ন্যুড পেইন্টিংয়ের ব্যর্থতা। এ এক সুষম, সমৃদ্ধ এবং পূর্ণাঙ্গ শরীর। শিল্পীর সুষ্ঠু দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা এবং রংতুলিতে রেখায় যা প্রকাশ করবে অদ্ভুত দ্যোতনা।’ শিল্পচর্চার এই দ্যোতনার কথা পাই জুয়েলের উপন্যাসে।
কখনোবা তীব্র নাটকীয়তা ছড়িয়ে পড়ে তার উপন্যাসে। পাঠকের মধ্যে প্রবল কৌতূহল আর উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারেন জুয়েল কবির। ‘কাইল রাইতে ফাঁসি নিতে গেছিলাম গাছের ডাইলে। ডাইল ভাইঙ্গা পইরা গেছি। কাজের কাজ কিছু হয় নাই, মধ্যে থাইক্কা কোমরে ব্যথা পাইছি। গলাতেও দাগ হইছে। এখন সবাই খালি এই দাগ নিয়া প্রশ্ন করতাছে।’Ñ বাতাসীর এই সংলাপের পর পাঠক উন্মুখ হয় ঘটনার পরবর্তী মোচড় দেখার অপেক্ষায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে অতি নাটকীয়তা এই উপন্যাসের নান্দনিক পরিপ্রেক্ষিতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গল্প বয়ানে মনোযোগ থাকা ভালো, আধুনিক উপন্যাসে গল্পহীনতার একটা চর্চা তো চলছেই। তবে চিত্রকলা, ন্যুড পেইন্টিংয়ের নন্দনতাত্ত্বিক একটা মজবুত পাটাতন তৈরি করার সুযোগ এ উপন্যাসে ছিল। এ প্রসঙ্গে ক্ষুধা রয়ে গেল।
জুয়েলের ভাষাভঙ্গি, চরিত্র সৃষ্টি যথেষ্ট সরস। উপন্যাসের একপর্যায়ে চারুকলার পেশাদার মডেল বাতাসীর সঙ্গে এক রিকশায় দেখা যায় আদনানকে, সেই নিয়ে বন্ধু রবি ঘোষ গান শোনায়Ñ
‘আরে... শোনো শোনো শোনো সবাই শোনো দিয়া মন,
আদনান বাতাসী করে রিক্সাতে ভ্রমণ।
পাশাপাশি বসে দু’জন ঠাসাঠাসি কইরা,
এই ঘটনা দেইখা আমি লজ্জাতে যাই মইরা।
আবার আমায় কইলো শালায় যাইবো নাকি বাসায়,
ঘরেতে কী করবো দুইজন যায় না বলা ভাষায়।’
রবি ঘোষ নামকরণটিও যথেষ্ট সরস ইঙ্গিত দেয়। এই গানের মধ্যে শুধু রবি ঘোষ নয়, আমাদের পরচর্চাপরায়ণ মনের খবরটিও নিহিত।
শুধু গান নয়, জুয়েল কবিরের উপন্যাসে আমরা কবিতাও পাই। আদনান যৌবনে কবিতা লিখেছিলেনÑ
ব্রহ্মপুত্রের জল পবিত্র
কারণ এ জল কারো শত্রু নয়
সকলের মিত্র।
পবিত্র ব্রহ্মপুত্রের জল
কারণ এতে স্নান করে
পতিতার দল।
গান, কবিতা, চিত্রকলা, ভাস্কর্য, শিল্পী, মডেল ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ টেনে এনেছে জুয়েল কবির। আপাত আকারে ছোট এই উপন্যাসের অন্দরে ঠাস বুননের মতো রয়ে গেছে বিবিধ ঐশ্বর্য।